প্রচ্ছদ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী ইশতেহার – ২০২০ মেয়র আতিকের খোলা চিঠি মেয়াদ কালীন ৯ মাসের অর্জন

মেয়র আতিকের খোলা চিঠি

সুপ্রিয় সুহৃদ, প্রিয় নগরবাসী, 

আসসালামু আলাইকুম,


হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষেরও বেশি মা-বোন; যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতা, তাদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা। মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

সবাইকে মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা।

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন এর বিরুদ্ধে, এ জাতিকে স্বাধীন সার্বভৌম সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ভঙ্গুর দেশের দায়িত্ব নিয়ে মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলার কাঠামো দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। শুরু হয়েছিল দেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রা। কিন্তু, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আমাদের প্রগতিশীলতা, উন্নয়ন-অগ্রগতি- সবকিছুকেই স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

বিএনপি-জামাত জোটের শাসনকালে সীমাহীন দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কারণে, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি শুধু স্থবিরই হয়নি, অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার বাংলাদেশের মানুষ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।

শুরু হলো আলোর পথে যাত্রা...

১১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ আলোয় উদ্ভাসিত। উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে SDG (Sustainable Development Goal) পূরণে এক রোল মডেল। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় অংশ নিতে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে ও ঢাকা উত্তরের নাগরিকবৃন্দের আহ্বানে সাড়া দিয়ে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে আমি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২০ – এ অংশ নিচ্ছি। আমার মতো অন্যান্য মেয়র প্রার্থীগণ, কাউন্সিলর প্রার্থীগণ; সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজ সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সততা-নিষ্ঠার সাথে কাজ করলে, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে পারবো।

৪০০ বছরের পুরনো শহর-ঢাকা; যার বাঁকে বাঁকে ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংগ্রাম আর বিনির্মাণের গল্প। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বিকশিত হয়েছে। বিশ্বের জনবহুল শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঘনবসতিপূর্ণ এ শহরের মানুষের যাপিত-জীবনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও এ শহরটি-ই আমাদের কাছে বড় আবেগের, বড় ভালোবাসার।

আপনারা জানেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ উদযাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। ইতিমধ্যে এ উপলক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে "মুজিব বর্ষ" ঘোষণা করা হয়েছে। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় সমাদৃত। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এই মহোৎসব দু'টির অপেক্ষায় গোটা বাঙালি জাতি। আমি বিশ্বাস করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ  ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত ১০/১১ বছরে  রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে এগিয়ে, বর্তমানে এসে উপস্থিত হয়েছে। সেই অগ্রযাত্রায় দিশারি আমাদের প্রিয় শহর ঢাকা। 

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে বহু কাজ করেছে। আরও বহু কর্মসূচী বাস্তবায়িত হচ্ছে।

একটি শহরের প্রাণ হচ্ছে শহরের পাড়া ও মহল্লাগুলো। সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া ও মহল্লাকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। প্রতিটি এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করাটা অত্যন্ত জরুরি। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই নগরীর সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যার ফলে এই নগরীতে বসবাস করা মানুষগুলো সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
আমার প্রধান লক্ষ্য, এই নগরীকে কেবল বসবাস উপযোগী নয় বরং; নগরবাসীর জীবনমানেরও উন্নতি সাধন করা। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন উপ-নির্বাচন ২০১৯-এ প্রদত্ত নির্বাচনী ইশতেহারের অধিকাংশ কাজই শুরু হয়েছে। আমার গত ৯ মাসের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে আগামীর আকাঙ্ক্ষিত ঢাকা গড়ার লক্ষ্য অর্জনে পেশ করছি আমার ত্রিমুখী ইশতেহার।